ধোঁয়া দের কে যত্ন করে আটকে বুকের মাঝে দেড় মাস
পর কফির কাপেতে তুফান তুলেছি আজ,
পুরনো কিছু মানুষের সাথে দেখা তাই বাতিল করেছি
প্রাত্যহিক কাজ ।
সে দিনের সেই সঙ্গিনী আজ নেই,আজকে চেয়ার সাথী
দের নিয়ে ঠাসা ,
আজ তোমরা বন্ধু সঙ্গী তো, সেদিন ছিল সঙ্গিনী
ভালবাসা ।
মাথার ফ্যান টা সেদিনও ঘুরছিল,জরাজীর্ণ গম্ভীর
গতিতে
মাঝে মাঝে তাই সেদিনের কথা মনে করে, হারিয়ে
যাচ্ছি সেদিনের স্মৃতিতে ।
বেয়ারা গুলো পাগড়ী জড়িয়ে মাথায়, ঘুরছিল নিয়ে
হাতে খাবারের ডিশ-
সে দিন
আমরা টেবিলের দুই ধারে , কথাবার্তা চলছিল ফিসফিস,
আমিই মূলত বলে চলেছি নানা রকমের কথা ।
সঙ্গিনী সেদিন চুপচাপ,আগ্রহ নেই শুধুই নীরবতা ,
নীরবতা ভেঙ্গে ধরেছি তার হাত, বলেছি ‘বলোনা কি
হয়েছে তোমার ?’
হাত ছাড়িয়ে সঙ্গিনী বলেছিল, ‘কি আর হবে,কিছুই
হয়নি আমার ।’
আমি বলেছি, ‘মনেতে রেখোনা দ্বন্দ্ব , কাম অন সোনা বলেই ফেলনা আমায় ,’
হেসে বলেছিল, ‘না থাক, কদিন পরেই বলবো , তোমার সামনে বলতে ভয় হয়’
আমি বলেছি ‘আমায় কিসের ভয়! বলোনা প্লিস এক বারতো
বলো ’
সেই হাসির রেশ
ধরেই বলেছিল, ‘যদি কেঁদে ফ্যালো !!’
আমার দিকে তাকিয়ে ছিল সে, তার ভুবনমোহিনী রূপের
ডালি নিয়ে
তবু আমি মুগ্ধ হইনি মোটেই,অজানা শঙ্কায় উঠেছি
ঘেমে নেয়ে ।
ইনফিউসান দু’কাপ এসে গেল হঠাৎ এক দমকা হাওয়ার
মতো ,
তাকে দেখলাম ভীষণরকম স্থির, না বলা কথাটা বলতে উদ্যত
বলে চলল ‘জানিনা কি ভাবে নেবে,অনেক করে বলতে
বললে তাই
বলছি ,আমার এই নিজের জীবনটাকে নতুন করে শুরু করতে চাই ।’
বুঝিনি কিছুই,ফ্যালফ্যালিয়ে শুধুই তাকিয়ে ছিলাম ,
সে বলেছিল, ‘অ্যাম আই ক্লিয়ার ? বোঝাতে পারলাম ?’
এক মুখ ধোঁয়া ছেড়ে ঠাট্টার ছলে বলেছিলাম, ‘প্রেম
করছ ? প্লিস এভাবে দিওনা সাজা ‘
হেসে বলল, ‘আমার সঙ্গে পড়ে ,ভীষণ স্মার্ট,
দাবাড়ু ওর নাম রাজা’
হঠাৎ এতটা কঠিন বাস্তবে আমি তখন দিশেহারা হয়ে
একা,
বলেছিল এই সপ্তা খানেক আগেই ওদের কমন রুমে
দ্যাখা ।
তারপর সেই টুকরো আলাপ খুচরো হাসি থেকে ,
এখন নাকি আমাকে নয়,স্বপ্নে ওকেই দ্যাখে ।
আমি তখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠছি যেন ,
চারদিক সব ফাঁকা শুনশান , কেউ নেই একজনও
আস্তে আস্তে উঠে পড়েছি পুরনো চেয়ার থেকে,
রাস্তাদিয়ে দুজন চলেছি, কোনোমতে এঁকেবেঁকে ,
জীবনে সেই প্রথম বার ভ্যালেন্টাইন হয়ে ,
ইউনিক সব গিফট কিনেছি , দারুণ ব্যস্ত হয়ে ।
ধীরে ধীরে তাকে দিয়ে এসেছি তার বাড়ীর পথে ,
চোখের জল কে আটকে রেখেছি কষ্টে কোনোমতে ,
হাসিমুখেই সঙ্গিনী কে শেষ বিদায় দিয়ে -
মেট্রো ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকেছি, তখন দুগাল বেয়ে –
অশ্রু গ্রন্থি নিঃসৃত চোখের নোনতা জল
ধীরে ধীরে সব আবছা,ঝাপসা, স্থানীয় কোলাহল ।
আবার সেই চেনা গন্ধটা, গরম ইনফিউশান রেখে যাছে
সেই পাগড়ীধারী-
এখানে এলেই আরও অনেকের মতো আমিও ভীষণ ইমোশানাল
হয়ে পড়ি।