Saturday 9 September 2017

তিলোত্তমা বলেছিলে আমায়,
ব্যাখ্যা করে বলেছিলে,
তিল তিল করে আহৃত সৌন্দর্যের পুঞ্জিভূত প্রতিমা
যদিও মূর্তিপুজোয় বিশ্বাসী ছিলেনা তুমি,তবুও
প্রেমে পড়লে হয়ত এরকমই হয় মানুষের,আদ্যোপান্ত
নাস্তিক তুমিই কিনা তুলনা করলে চিন্ময়ী প্রতিমার সঙ্গে!
বিষ্ময়ে সে রাত্রে আমার ঘুম হয়নি,নাকি তোমার পুঞ্জিভূত প্রেম আমার অনিদ্রার স্ফুরণ ঘটিয়ে ছিল!
জানিনা...শুধু জানি পরদিন ধুম জ্বর এসেছিল,মাথায় জলপটি লাগিয়ে দিয়েছিল বাড়ির লোকেরা পালা করে,জ্বরের ঘোরে মনে হয় অস্ফুটে তোমার নাম ধরে ছিলাম কয়েকবার....আমার মনে পড়েনা জানো,শোনা কথা তাও কানাঘুষোয়।
তিনদিন পর তোমার সাথে দেখা হয়েছিল,কোলকাতায় তখন পুজোর আবহ,জনমানুষে ক্রমশ যেন প্রকট হচ্ছিল খুশীর স্পন্দন,স্পন্দনবেগ সঞ্চারিত হয়ে ছিল আমাদের মধ্যেও আমরা সেদিন সদ্যজাত প্রজাপতির মত গোটা শহর উড়ে বেড়িয়েছিলাম,মনে আছে?
তারপর লিণ্ডসে স্ট্রীট ধরে হাঁটতে হাঁটতে পিটার ক্যাটের ঝিমিয়ে যাওয়া আলোয় চেলো কাবাব খেয়ে উদরপূর্তি...
বাইরে এসে বলেছিলাম কোথা থেকে আসে এত সাধ!!! নিজেকে উজাড় করে দিয়ে নিঃস্ব হবার মধ্যে কি আনন্দ পাও তুমি?
হেসেছিলে,সংক্রামক ব্যাধির মত সেই হাসি ছড়িয়ে পড়েছিল আমার ঠোঁটেও...খিল খিল করে হাসতে হাসতে কখন যে পার্কস্ট্রীটে সন্ধ্যে নেমে এসেছিল আমরা বুঝিনি....তুমি বলেছিলে আলোয় ভাসছে তিলোত্তমা,দেখো ঠিক যেন তুমিই...উচ্ছ্বল,প্রবহমান অথচ কি ভীষণ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নিয়ে বয়ে চলছে,আমি বারবার বিমুগ্ধ চিত্তে নির্নিমিখ তাকিয়ে থাকি,সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় আমি হারিয়ে যাই বারবার,সম্বিৎ ফিরে পেতে দেখি তুমি আমার সামনে দাঁড়িয়ে...তাই তো তোমায় তিলোত্তমা বলে ডাকি,তাই তো বারবার তোমার দিকে সসম্ভ্রমে তাকিয়ে থাকি!
এত ভাবগম্ভীর আলোচনাচক্রে আমি খেই হারাই চটকরে,এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি।তুমি বোধহয় বুঝতে পেরেই আমায় বললে জানো কাল একটা কবিতা লিখেছি,তারপর বুক পকেট থেকে ভাঁজ করা একটা কাগজ বার করে পড়তে শুরু করলে,
তুমি তিলোত্তমার মত,
ট্রাম লাইনের জন্য যেমন
পিচ রাস্তার ক্ষত
সেই ক্ষতরই প্রলেপ লাগায়
যারা,তাদের দলে
অবাক হয়োনা ওদের সাথে
আমায় দেখতে পেলে
তোমার ক্ষতয় আঙুল রাখি
এই টুকু তো চাওয়া
সেই কারণেই ওদের দলে
নাম লেখাতে চাওয়া
চাহিদা প্রেমে থাকে
ওরাও জানে তাই আমাকে
ওদের দলে রাখে
রোড রোলারের চাকায় আমি
হাত রেখেছি কত,
জ্বলুক দুহাত ঢাকছি আমি
তিলোত্তমার ক্ষত
প্রলেপ লাগাই শহর জুড়ে
দিনান্তে পাই তুষ্টি
আমার তিলোত্তমা,সে যে
তোমার মতই মিষ্টি
এই যে কদিন আগে
জ্বর বাঁধালে গত সপ্তার
একেবারে শেষ ভাগে
আমি সেদিনও টের পেয়েছি
গরম ছিল খুব
তিলোত্তমা সেদিন ডেকে
বল্ল মেহবুব
পুড়ছি আমি দেখছ না কি
রোদের অমন তেজে
বর্ষা ডাকি এক তুড়িতে
তিলোত্তমা ভিজে
নিম্নমুখী তাপ
তিলোত্তমার জ্বর হয়েছে
আমার মনখারাপ
জ্বরের শেষে আবার এলে
তিলোত্তমা তুমি
তিলোত্তমা আমার পুজোর
অর্ঘ্য সংগ্রামী
সাংগঠনিক শক্তি তো নেই
শুধুই ভালোবাসি
তিলোত্তমার স্পর্শ টুকুই
কেবল প্রত্যাশী
তুমি তিলোত্তমার মত
ট্রাম লাইনের মধ্যে যেমন
কল্লোলিনীর ক্ষত।
আমার দুচোখ ঝাপসা হয়ে এল,আলোকিত শহরের আলোক বুদবুদ দেখতে দেখতে শুনতে পেলাম শাঁখের আওয়াজ,কোথায় যেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র বলছেন
আশ্বিনের শারদপ্রাতে জেগে উঠেছে আলোকমঞ্জির
ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা
প্রকিতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা.......
©অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়

Thursday 18 December 2014

আল্লাহ্‌

বাচ্চা মেরে পুরুষ সাজিস মৌলবাদী বীর,

ধর্ম টা কে বর্ম করে বুলেট ছুঁড়িস!!

শ্রীমুখ ঢেকে জোব্বা গায়ে অস্ত্র হাতে,

জেহাদ বলে আল্লাহ্টা কেই সওদা করিস!!


আল্লাহ্তোদের বাপের কেনা গোলাম কি না!!

খুন করবি,চোখ রাঙাবি আল্লাহ্বলে

অস্ত্র হাতে হামলা করবি যখন তখন,

চোখ রাঙাবি, হুমকি দিবি সদলবলে


ধর্ম কি রে? বুলেট নাকি মানব বোমা!!

বাচ্চা মেরে কি ছিঁড়লি,তা তোরাই জানিস!!

আল্লাহতালা সত্যি যদি ক্ষমতা থাকে

তবে,তোদের সবার শাস্তি হবে,তৈরি থাকিস

Thursday 11 December 2014

পরোবাসী



ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে ছিলে,ভালোবেসে
বিলি কেটে ছিলে ঝাঁকড়া চুলে প্রচন্ড আশ্লেষে,
তোমার করে আঁকড়ে রেখেছ যাকে,
সে অন্যকাউকে সঙ্গে নিয়ে,তোমার ঘরে থাকে।
হাত বাড়িয়ে ধরেছিলে তার শরীর,
তোমার প্রিয়,তোমার চোখে বীর
তবু বীরের ভোগ্যা বসুন্ধরা নারী!
ভাব শেষ, শুধু নের সঙ্গে আড়ী।
নিঃস্বাসে তুমি ঘ্রাণ নিতে তার বুকে,
মাথা ছোঁয়াতে মান অভিমান,দুঃখ এবং সুখে
আজও আড়ি পেতে কি শুনতে চাও ? প্রিয় প্রিয়ার হাসি!!
তোমার প্রিয় তোমার ঘরেই তবুও পরোবাসী

কী ?

কি চাইছো!!
সুখ না সোহাগ?
কি চাইছো!!
প্রেম না কাম?
কিসের জ্বালা?
বিষের নাকি!!
শরীর শরীর 

তুলকালাম।


কি খুঁজছো?
বাড়ি নাকি ঘর!!
কি খুঁজছো?
হারানো সুখ!!
অশ্রু চোখের
প্লাবন রোধে;
কি খুঁজছো?
চওড়া বুক!!


কি খুঁড়ছো?
স্মৃতির কবর!!
কি খুঁড়ছো?
শরীর টাই!!
শরীর মনের
সীমান্তে বসে,
কি করছো
প্রতিক্ষা(ই)!!

Thursday 4 December 2014

মৃত্যু উৎসব



দুঃখের সাগরে ডুবে যেতে যেতে শেষ বারের মতো বাঁচতে চেয়ে হাতটা তুলে ছিলাম

তোমার উদ্দেশ্যে, ভেবেছিলাম তুমি নিশ্চয়ই বাঁচাবে আমায়,

ত্রাণ দেবে।কিন্তু না, আমার সে আশাকেও জলাঞ্জলী দিতে হল,

তুমি এলে না।দুর থেকে চেয়ে চেয়ে দেখলে কেমন করে ডুবে যাচ্ছি আমি।

প্রথমে নাকে মুখে জল ঢুকে গেল, তখনও কিন্তু হাত পা ছুঁড়ছি , তারপর

আস্তে আস্তে খাবি খেতে খেতে তলিয়ে গেলাম।

তোমরা তখন ডুবুরী নামালে, অনেকক্ষণ চেষ্টায় ওরা খুঁজে পেল আমার ফোলা দেহটা 

তুলে নিয়ে এসে রাখল এক ধারে। প্রথমে তুমি পরে একে একে সবাই 

ফুল দিলে,আমায় সাজালে নতুন কাপড়ে,মুখে লাগালে চন্দনের ফোঁটা,

ধূপের গন্ধে ম ম করল চারদিক, চতুর্দোলায় চপিয়ে নিয়ে চললে আমায়,

রাস্তার ধারে অত্যুতসাহী জনতার সমাবেশ। বেঁচে থাকতেও এত সম্মান পাইনি কখনো ;

সেই ভীড়ের বুক চিরে এগিয়ে চল্লাম,বিচিত্র এই দেশে আজ আমার মৃত্যু উৎসব।

Sunday 30 November 2014

নির্নিমেষ



তোমার চোখে মুগ্ধ হয়েছি বারবার,
টানাটানা চোখ দুটো তে কি আছে গো ?যাদু!
জানিনা, তবু সম্মোহিত হই।
অদৃশ্য মায়ায় বশ করে ফেল দৃষ্টি দিয়ে!
আমিতো পলক ফেলতে পারিনা, শুধুই
 মোহাচ্ছন্ন স্থাণুর মতো ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকি!
মহাপ্রলয়ের অপেক্ষায়